মঙ্গলবার, মে ১০, ২০১১

ল্যাপটপের ব্যাকআপ টাইম বাড়ানোর সহজ কিছু টিপস


লোডশেডিং এর এই সময়ে কম্পিউটার যাদের জন্য অতীব জরুরি তাদের কাছে ল্যাপটপের ল্যাপটপের ব্যাকআপ টাইম বাড়ানোব্যাকআপ টাইম যে কতটা মূল্যবান তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আর তাই ল্যাপটপ কেনার সময়ই এখন আগে সবাই দেখে নেন এটি কতক্ষণ ব্যাকআপ দিতে পারবে সেটা। বর্তমান সময়ের সব মডেলের ল্যাপটপই ২ থেকে শুরু করে ১০ ঘন্টা পর্যন্ত ব্যাকআপ দিতে সক্ষম। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে কোম্পানী যা বলে তা পাওয়া যায় না,মানে ব্যাকআপ টাইম যতটা বলা হয়েছিল ততোটা পাওয়া যাচ্ছে না। এর কারণ হচ্ছে কোম্পানী যেভাবে ব্যাকআপ টাইম হিসাব করে আমরা তো আর সেভাবে ব্যবহার করি না। আরো সহজ কথায় বলতে গেলে আপনি যদি গান শুনেন তাহলে যতক্ষণ ব্যাকআপ পাবেন,ভিডিও দেখলে তারচেয়ে কম ব্যাকআপ পাবেন। এভাবে যতোবেশি রিসোর্স হাংরি প্রোগ্রাম আপনি রান করাবেন ততোই কমে যাবে ব্যাকআপ টাইম।
তাই বলে কি আপনি কাজ বাদ দিয়ে দিবেন নাকি? তাহলে আর ল্যাপটপের দরকার রইলো কোথায়? সেজন্যই এই টিপস। কিভাবে কি কি করে আপনি আপনার ল্যাপটপের ব্যাটারিটিকে আরেকটু বেশিক্ষণ বাঁচিয়ে রাখতে পারেন তাই বলব আজ।
প্রথমেই চলে আসবে অপারেটিং সিস্টেমের কথা। আপনি কোন অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করছেন তার উপরও ব্যাকআপ টাইম নির্ভর করবে। আপনার ল্যাপটপ যদি বেশি পুরানো না হয়ে থাকে তাহলে উইন্ডোজ এক্সপি বা ভিসতার চেয়ে আপনি সেভেন ব্যবহার করলে বেশিক্ষণ ব্যাকআপ পাবেন। আরেকটা কথা,ডেস্কটপ কম্পিউটারের ক্ষেত্রেও উইন্ডোজ সেভেন আগের যেকোনো উইন্ডোজের চেয়ে কম বিদ্যুত খরচ করে যা আপনার মাসিক বিদ্যুত বিলে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। বিভিন্ন পরীক্ষার ফল কিন্তু তাই বলে।
আপনি হয়তো ভাবছেন এ আবার এমন কি প্রভাব ফেলতে সক্ষম? একটা উদাহরণ দিলে সব পানির মতো পরিষ্কার হয়ে যাবে আপনার কাছে। এপলের ম্যাকবুকে যখন ম্যাক ওএস চলে তখন এটি প্রায় ৮ ঘন্টা ব্যাকআপ দেয়। আর সেই ল্যাপটপই মাত্র দেড় ঘন্টা ব্যাকআপ দেয় যখন সেটিকে চালানো হয় উইন্ডোজে। মূলত অপারেটিং সিস্টেমের সাথে হার্ডওয়ারের সম্পর্ক এবং সার্বক্ষণিক চলতে থাকা বিভিন্ন সার্ভিসই এই পার্থক্য গড়ে দেয়।
ল্যাপটপের ব্যাটারী সেভ করতে গেলে আপনার আগে জানা দরকার এর কোন অংশতি সবচেয়ে বেশি বিদ্যুত খরচ করে। কোনো ধারণা আছে আপনার?প্রসেসর?ওয়াই-ফাই?স্পীকার?নাকি অন্য কিছু? না পাঠক এর কোনোটাই না,উত্তর হবে ডিসপ্লে। বিশ্বাস করেন আর নাই করেন ব্যাটারীর ৪৩%ই খরচ করে এর ডিসপ্লে। আর অন্য হার্ডওয়ারের মধ্যে মাদারবোর্ড ২১%, প্রসেসর ৯%, গ্রাফিক্স ৮%, হার্ডডিস্ক ৫% আর নেটওয়ার্ক ডিভাইস ৪% পাওয়ার খরচ করে।
উইন্ডোজ সেভেনে ল্যাপটপের ব্যাকআপের কথা মাথায় রেখে এর পাওয়ার প্ল্যানকে সেভাবে তৈরি করা হয়েছে উইজারের বিভিন্ন প্রয়োজনের কথাই মাথায় রেখে। উইন্ডোজ মোবিলিটি সেন্টার এর অন্যতম। কীবোর্ডের উইন্ডোজ+এক্স কী একসাথে প্রেস করলেই এটি ওপেন হবে।
উইন্ডোজ মোবিলিটি সেন্টার
উইন্ডোজ মোবিলিটি সেন্টার
এখান থেকে আপনি খুব সহজেই ডিসপ্লে ব্রাইটনেস,স্পীকার ভলিউম,পাওয়ার প্ল্যান সেটিংস,ওয়ারলেস নেটওয়ার্কিং, সিনক্রোনাইজেশন,প্রেজেন্টেশন মোড এবং এক্সটার্নাল ডিসপ্লে সেটিংস পরিবর্তন করতে পারবেন। আর ডিসপ্লে ব্রাইটনেস যে আপনার ল্যাপটপের ব্যাকআপ টাইমের অন্যতম নিয়ামক তা নিশ্চয়ই এতোক্ষণে বুঝে গেছেন। তেমনি অযথা সারাক্ষণ ওয়ারলেস নেটওয়ার্কিং বা ওয়াই-ফাই চালু রাখারও নিশ্চয়ই কোনো কারণ নেই?
এর পরেই চলে আসি মূল অপশনে। পাওয়ার প্ল্যান সেটিংস হচ্ছে আপনার ল্যাপটপের ব্যাকআপের পেছনে মূল অনুঘটক। নোটিফিকেশন এরিয়াতে ব্যাটারী আইকনে ক্লিক করেই আপনি এর দেখা পাবেন। এখানে থেকেই খুব সহজে কতোক্ষণ ব্যাকআপ থাকবে,পাওয়ার প্ল্যান পরিবর্তন বা ডিসপ্লে ব্রাইটনেস পরিবর্তন করতে পারবেন। আর কথা না বলে এবার ঢুকে যাই পাওয়ার প্ল্যানের ভেতরে। ল্যাপটপে অফিসের যেকোনো কাজ বা বিনোদনের কাজের জন্য পাওয়ার সেভার প্ল্যানটিই উত্তম। এটি নিয়ে কাজ করতে আপনার কোনো সমস্যাই হবার কথা না। যদি আপনি রিসোর্স হাংরি কোনো কাজ করেন বা গেম খেলতে চান অথবা হাই ডেফিনেশন মুভি দেখতে চান তখন ব্যবহার করতে পারেন ব্যালেন্সড বা হাই পারফরম্যান্স সেটিংস।পাওয়ার প্ল্যান সেটিংস
কয়েক সংখ্যা আগে টেকনোলজি টুডেতে ডেস্কটপের জন্য পাওয়ার প্ল্যান সেটিংস নিয়ে বলেছিলাম আপনাদের। সেখানেই আপনি বিস্তারিত জানতে পারবেন এ সম্পর্কে। আমি এখানে ল্যাপটপের জন্য আলাদা পয়েন্টগুলা বলছি।
>> পাওয়ার সেভারে ক্লিক করে চেঞ্জ প্ল্যান সেটিংস-এ যান।
>> এখানে আপনি ব্যাটারী এবং প্লাগড ইন অবস্থার জন্য আলাদা-আলাদা সেটিংস অপশন খুঁজে পাবেন।
>> ডিম দা ডিসপ্লে মানে হচ্ছে কোনো কাজ না করলে কতোক্ষণ পর আপনার মনিটরের ব্রাইটনেস কমে যাবে সেটা। পরের ২টা অপশন ত বুঝতেই পারছেন। আর শেষটি হচ্ছে ডিসপ্লে ব্রাইটনেস। অন ব্যাটারীতে ব্রাইটনেস যতোটা সম্ভব কমিয়ে রাখুন।
>> এবারে নিচে চেঞ্জ এডভান্সড পাওয়ার সেটিংস-এ ক্লিক করুন। এখানে প্রায় ল্যাপটপের প্রতিটি কম্পোনেন্টের জন্যই কিছু না কিছু পাবেন আপনি। অন ব্যাটারীর জন্য সবই কমিয়ে রাখুন।
>> আর নেটওয়ার্কিং এন্ড শেয়ারিং সেন্টারে গিয়ে ওয়ারলেস নেটওয়ার্ক কানেকশন বা ওয়াই-ফাই ডিজাবেল করে দিন। কেননা এটি অন থাকলে তা প্রতিনিয়তই ওয়াই-ফাই কানেকশন খুঁজে যেতে থাকে।

  1. হার্ডওয়ার আপগ্রেড করে পিসির গতি বাড়ানোর সহজতম ২টি টিপস
  2. ট্যাবলেট কম্পিউটারের ব্যাটারী লাইফ বাড়ানোর টিপস
  3. আইপডের ব্যাটারী লাইফ বাড়ানোর টিপস
  4. আপনার উইন্ডোজের রেজিস্ট্রি ব্যাকআপ করে রাখুন
  5. টিপস – ডুয়াল মনিটর অপটিমাইজ করে নিন

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন