ল্যাপটপ, সার্ভার কিংবা যে-কোনো সাধারণ ডেস্কটপ কম্পিউটারের স্নায়ু কেন্দ্র একটিমাত্র সমন্বিত চিপ- মাইক্রোপ্রসেসর যা কম্পিউটারের সিপিইউ নামে পরিরিচত। প্রকৃতঅর্থে, মাইক্রোপ্রসেসর একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং প্রোগ্রামেবল এমন একটি গাণিতিক ইঞ্জিন যা ইন্সট্রাকশনের মাধ্যমে কম্পিউটারের যাবতীয় অপারেশন নিয়ন্ত্রণ এবং সম্পাদন করে। এই সমন্বিত চিপটি একটি ছোট, পাতলা সিলিকন যার সামান্য কয়েক বর্গমিলিটিমারে কয়েক কোটি ট্রানজিস্টার থাকে।
পৃথিবীর প্রথম মাইক্রোপ্রসেসর ছিল Intel ৪০০৪ যা ১৯৭১ সালে প্রথম ব্যবহৃত হয়। এটি খুব একটা শক্তিশালী মাইক্রোপ্রসেসর ছিল না। এটি শুধু যোগ বিয়োগ ছাড়া তেমন কিছুই করতে পারত না। এই মাইক্রোপ্রসেসরের বিশেষত্ব ছিল, কেবল একটি চিপেই এটি সমন্বিত ছিল। Intel ৪০০৪-এর পূর্বে, বেশ কিছু চিপ এবং ট্রানজিস্টার সমন্বয়ে কম্পিউটার তৈরি হতো। ১৯৭৪ সালে হোম পিসিতে ব্যবহৃত প্রথম মাইক্রোপ্রসেসরটি ছিল ৮বিট অপারেশন সম্পন্ন একটি স্বয়ংক্রিয় চিপ। পরবর্তীতে ১৯৭৯ সালে Intel ৮০৮৮ মাইক্রোপ্রসেসরের ইতিহাসকে আরো একধাপ এগিয়ে নিয়ে যায়। ১৯৮২ সালে Intel ৮০৮৮ প্রসেসরটি IBM পিসিতে প্রথম ব্যবহৃত হয়। পরবর্তীতে Intel ৮০৮৮ থেকে Intel ৮০২৮৬, Intel ৮০২৮৬ হতে Intel ৮০৩৮৬, এরপর Intel ৮০৪৮৬, পেন্টিয়াম I, তারপর পেন্টিয়াম II, পেন্টিয়াম III, পেন্টিয়াম IV, ডুয়েল কোর, কোর ২ ডুও, কোয়াড কোর, কোর আই থ্রি/ফাইভ/সেভেন কম্পিউটার জগতে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের ধারাকে অব্যাহত রাখে। Intel-এর পাশাপাশি AMD, Cyrix-এর কিছু মাইক্রোপ্রসেসর কম্পিউটার বিপ্লবে নতুন মাত্রা যোগ করে। Intel-এর সমস্ত আধুনিক মাইক্রোপ্রসেসর আসলে Intel ৮০৮৮-এর পরিবর্ধিত সংস্করণ মাত্র।
এরপর ২০০৬ সালে ইন্টেল বাজারে আনে কোর ২ ডুও সিরিজের প্রসেসর যেখানে একইসাথে একটি মাইক্রোপ্রসেসরের মধ্যে দুইটি চীপ বসানো হয়। তার ধারাবাহিকতায় বর্তমানে বাজারে এসেছে কোয়াড কোর এবং হালের নতুন কোর আই থ্রি,আই ফাইভ এবং আই সেভেন প্রসেসর যেগুলার সাথে কিনা প্রথমদিকের মডেলগুলার গতির তুলনা করাটাও কঠিন কাজ। বলা হয় প্রতি দেড় বছরেই দ্বিগুন হচ্ছে প্রসেসরের গতি।
- প্রথম প্রকাশঃ মাসিক টেকনোলজি টুডে
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন